দরখাস্ত লেখার ৮ টি ধাপ । আবেদন পত্র লিখার সহজ পদ্ধতি।

 আলেয়া দরখাস্ত লেখার ৮ টি ধাপকমল


ব্লগ দরখাস্ত লিখার পদ্ধতি
লেখক কমল (ছদ্ম)

 

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে দরখাস্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয়। ছাত্র জীবন থেকে শুরু করে কর্মজীবনে শেষ অব্দি নানান সময় আমরা দরখাস্তের ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো দরখাস্ত লিখতে গেলে আমরা ভীতি অনুভব করি এবং অন্যের দ্বারস্থ হয়। তবে সত্য কথা হলো দরখাস্ত লিখা আহামরি কঠিন কোন কাজ নয়। দরখাস্তের টেমপ্লেট জানা থাকলে আমরা যে কেউ দরখাস্ত লিখতে পারি এবং অন্যদেরকে সহযোগিতা করতে পারি। তবে দরখাস্ত যেহেতু ফরমাল লেটার, এর অনেকগুলো ফরমালিটি রয়েছে। এখন আমি আপনাদেরকে দরখাস্ত লিখার সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে জানাবো।

• দরখাস্ত কি?

দরখাস্ত এক প্রকার চিঠি বা পত্র। এর অপর নাম হল আবেদনপত্র। ইংরেজিতে যাকে বলে Formal Letter। Formal শব্দটির অর্থ হল আনুষ্ঠানিকতা। অর্থাৎ যে পত্র আনুষ্ঠানিকতার সাথে লিখা হয় তাই হল দরখাস্ত। মূলত আমরা কোন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বা দায়িত্বশীল কোন ব্যক্তির নিকট কোন বিষয়ে আবেদন করার জন্য যে পত্র লিখে থাকি তাই হল দরখাস্ত বা আবেদন পত্র। 

নিচে দরখাস্ত লেখা আটটি ধাপ বর্ণনা করা হলো।

• দরখাস্ত লেখার ৮ টি ধাপ :

• ০১, প্রথমে মনে রাখতে হবে দরখাস্ত অবশ্যই এক পেইজে লেখা হবে । সাদা পেজটিকে বামে এবং উপরে সামান্য  ভেঙে নিতে হবে (১ ইঞ্চি হলে ভালো হয়)  তবে মার্জিন দাগ টানা যাবে না ।

• ০২, শুরুতে দরখাস্তের তারিখ  লিখতে হবে। মনে রাখা জরুরী প্রতিটি লাইনের শুরু হবে পেইজের বাম পাশের ভাঙ্গা থেকে।

নমুনা:-( তারিখ: ১২/০৬/২৩ ইং)

• ০৩, তারিখের নিচে 'বরাবর' লিখে তার নিচে প্রাপকের পদবী লিখতে হবে।

নমুনা:-
(ক)বরাবর,
     প্রধান শিক্ষক,

(খ) বরাবর,
      মহাব্যবস্থাপক 

(গ) বরাবর,
      অধ্যক্ষ

(ঘ) বরাবর,
      প্রশাসক 

• ০৪, এরপরের নিচে লিখতে হবে, উক্ত প্রতিষ্ঠানের নাম এবং তারপর পরবর্তী লাইনে সম্পূর্ণ ঠিকানা। ঠিকানা বলতে উক্ত প্রতিষ্ঠান যে স্থানে অবস্থিত তার নাম এবং উপজেলা ও জেলার নাম।

নমুনা: - (ক) ওছখালী, হাতিয়া,নোয়াখালী।

              (খ) কাউটাইল,কেরানীগঞ্জ,ঢাকা।

• ০৫, তারপর দরখাস্তের আবেদনের বিষয় লিখতে হবে অর্থাৎ কি জন্য আপনি আবেদন করছেন।

নমুনা:-

(ক) বিষয় : সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য আবেদন।

(খ) বিষয়: জরুরী প্রয়োজনে তিনদিন ছুটির জন্য আবেদন।

(গ) বিষয়: প্রশংসাপত্রের জন্য আবেদন।

• ০৬, এরপর " জনাব/মহোদয়, বিনীত নিবেদন এই যে," বলে দরখাস্তের আবেদনের কারণ ও যৌক্তিকতার বিবরণ দিতে হবে।

মনে রাখা ভালো "জনাব/ মহোদয়," এবং " বিনীত নিবেদন এই যে," এক লাইনে লিখা যাবে না।

নমুনা:-

(ক)মহোদয়,
     বিনীত নিবেদন এই যে, ____________

• ০৭, বিবরণ লেখা শেষ হলে আবেদনমূলক একটি প্যারা লিখতে হবে।

নমুনা:

(ক) অতএব মহোদয়ের নিকট বিনীত প্রার্থনা, আমাকে তিন দিনের ছুটি দিয়ে বাধিত করবেন।

(খ) অতএব বিনীত প্রার্থনা, আমাকে একটি প্রশংসা পত্র দিয়ে বাধিত করবেন।

• ০৮, সর্বশেষ 'বিনীত নিবেদক' লিখে আবেদনকারীর নাম এবং যুক্তিসঙ্গত পরিচয় উল্লেখ করতে হবে।

নমুনা:

(ক)
বিনীত নিবেদক,
মোঃ ফয়জুল করিম 
শ্রেণী: দ্বাদশ 
বিভাগ: বিজ্ঞান 
রোল: ০৩ 
ধ সরকারি কলেজ।

(খ)
বিনীত নিবেদক,
মোঃ সালাউদ্দিন
কাউটাইল ,কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

• দরখাস্তের টেমপ্লেট:

সহজে বুঝার সুবিধার্থে দরখাস্তকে ৪ ভাগে বিভক্ত করা হলো:

১২/০৬/২২
বরাবর,
অধ্যক্ষ মহোদয়,
ধ সরকারি কলেজ,
কাউটাইল, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।
বিষয়: জরুরী প্রয়োজনে তিনদিন ছুটির জন্য আবেদন।
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে,__________

( আবেদনের বিষয়বস্তু ও এর যৌক্তিকতার বিবরণ)

অতএব মহোদয়ের নিকট বিনীত প্রার্থনা আমাকে আগামী তিন দিনের জন্য ছুটি দিয়ে বাধিত করবেন।
বিনীত নিবেদক,
আপনার অনুগত ছাত্র,
মোঃ ফজলুল করিম
শ্রেণী: দ্বাদশ
বিভাগ: বিজ্ঞান
রোল: ০৩
ধ সরকারি কলেজ।



এই ব্লগটিতে আমি দরখাস্ত লিখার সহজ পদ্ধতি বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনারা উপকৃত হয়েছেন। এরকম আরো প্রয়োজনীয় টিপস পেতে আমাদের ওয়েব সাইটটি ঘুরে দেখতে পারেন, ধন্যবাদ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম